viral news hotel owner

২৫ টাকার চাকরি থেকে এখন হোটেল মালিক, গরিবদের খাওয়ান ফ্রিতে

অভাবের সংসারে পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা। ২২ বছর আগে বাবা-মায়ের ওপর অ’ভিমান করে পরিবার নিয়ে নিজ জে’লা ছেড়ে নওগাঁতে চলে আসেন।এরপর শহরের বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ডে ২৫ টাকা বেতনে হোটেলে কাজ শুরু করেন। আর সেই হোটেল বয় আজ হাজী নজিপুর হোটেল অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউসের মালিক আলী আজগর হোসেন।

তার বাড়ি নাটোর জে’লার সিংড়া উপজে’লার মহেষচন্দ্রপুর গ্রামে হলেও এখন জমি কিনে নওগাঁ শহরের চকরামচন্দ্র মহল্লায় বসবাস করছেন সপরিবারে।শহরের বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আ’দালত চত্বর। আ’দালত গেটের প্রধান ফট’কের বিপরীতে রাস্তার পশ্চিম পাশে ‘হাজী নজিপুর হোটেল অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউস’।যেখানে সপ্তাহে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। হোটেল মালিক সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০০-১৫০ জন গরিব শ্রেণির বিশেষ করে ভিক্ষুকদের পেট পুরে ফ্রিতে খাওয়ান।

viral news hotel owner

যেখানে খাবার মেন্যুতে থাকে মাছ, মাংস, ডিম, সবজি ও ডাল।হোটেলের সামনে চেয়ার-টেবিলে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। প্রথমে দেখলে মনে হতে পারে কোনো ছোটোখাটো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।এছাড়া অন্যান্য দিনে ২০-২৫ জনের মতো খেয়ে থাকেন। তবে বৃহস্পতিবার সবার জানা থাকায় সেদিন বেশি মানুষ হয়ে থাকে। এক যুগ ধরে এভাবে মানুষদের একবেলা খাবার দিয়ে আসছেন আলী আজগর হোসেন।

হোটেল মালিক আলী আজগর হোসেন বলেন, অভাবের মধ্য দিয়েও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। ১৯৯৭ সালে বাবা-মায়ের ওপর অ’ভিমান করে স্ত্রী’ ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে নওগাঁতে এসে হোটেলে ২৫ টাকা দিনে কাজ শুরু করি। বেশ কয়েক বছর হোটেলে কাজ করলাম। হঠাৎ একদিন হোটেল মালিক তার ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে বাড়িতে চলে গেলেন।তিনি বলেন, পরে হোটেল মালিককে বুঝিয়ে নিয়ে আসি এবং তার দোকান চালানোর জন্য অনুমতি নেই। মালিক বললেন, যদি দোকান চালাতে পার তাহলে চালাও। এতে আমা’র কোনো আ’পত্তি নেই।

আলী আজগর হোসেন বলেন, এরপর ২ কেজি, ৫ কেজি গরুর মাংস বিক্রি থেকে শুরু করে আজ অনেক বেচাকেনা হয়। দোকানে ৩৫ জন কর্মচারী কাজ করে। আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। শহরের মাথা গুঁজার মতো একটু জায়গা হয়েছে। দুই মেয়ে ও এক ছেলে পড়াশোনা করছে।বয়োজ্যেষ্ঠ নুর জাহান ও জাহিদুল বলেন, আম’রা গরিব মানুষ। ভিক্ষা করে ভালোমন্দ খেতে পারি না। ৩-৪ বছর ধরে এ হোটেলে নিয়মিত খেতে আসি। শহরের বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষা করে বৃহস্পতিবার দুপুরে এসে কখনও গোস্ত ও কখনও মাছ দিয়ে পেট পুরে খাবার খাই। আল্লাহ যেন দোকানদারের মঙ্গল করেন।